সবার মনেই একটি সাধারন প্রশ্ন থাকে যে, এলকোহলিক পারফিউম হারাম কিনা?
আজকে আমরা এটা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো ইংশা আল্লাহ।
এলকোহলের ব্যাপারে কথা হচ্ছে যে, এলকোহলকে আরবীতে বলে “খমর” আর এই “খমর” টা স্বয়ং হারাম কিনা এটা নিয়ে মতানৈক্য আছে। কিন্তু এলকোহল বা মদ যেটা খাওয়ার জন্য তেরী করা হয় সেটা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।
যেমন আল্লাহ বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অর্থাৎ, হে মু’মিনগণ! মস্তিষ্ক বিকৃতকারী মদ, উভয় পক্ষের বিনিময় সম্বলিত জুয়া, মুশরিকদের সম্মানিত পাথর যার নিকট তারা পশু জবাই করে অথবা তার ইবাদাতের জন্য স্থাপন করে এবং ভাগ্য নির্ধারণকারী তীর এ সবই শয়তানের প্রবঞ্চনা ও গুনাহের কাজ। তাই তোমরা তা থেকে দূরে থাকো। যাতে তোমরা দুনিয়ায় সম্মানজনক জীবন ও আখিরাতে জান্নাতের নিয়ামত পেয়ে কৃতকার্য হতে পারো। (সূরা মায়েদাহ্, আয়াতঃ ৯০)
কিন্তু মদ যদি গায়ে লাগে এটা নিয়ে সালাত আদায় করা যাবে কি না অর্থাৎ এটা স্বয়ং নাপাক কিনা এ নিয়ে মতানৈক্য আছে। কেউ কেউ বলেছেন এটা স্বয়ং নাপাক এটাকে গা থেকে উঠিয়ে নামাজ পড়তে হবে আবার কেউ কেউ বলেছেন এটা স্বয়ং নাপাক নয় এটা জামায় লাগলেও নামাজ পড়া যাবে।
মূলত পারফিউম তৈরীতে যে এলকোহল ব্যবহার করা হয় সেটা খাওয়ার এলকোহল নয়। ভাত, তাড়ি, আঙ্গুর পঁচিয়ে যেই এলকোহল তৈরী করা হয় আর পারফিউমে যে এলকোহল থাকে তা এক নয়।
এলকোহল পান করার ফলে মানুষের মস্তিষ্ক বিকৃত হয় বা নেশা হয় তবে পারফিউম ব্যবহারে মানব মস্তিষ্ক বিকৃত হয় না এবং নেশাও হয় না।
পারফিউমের এলকোহলটা মূলত স্পিরিট, এটা হচ্ছে প্রিজারভিটিভ ক্যামিক্যাল যা ঘ্রান টা কে দীর্ঘক্ষন টিকিয়ে রাখতে ব্যবহৃত হয় এবং এর অনুগুলোকে লক্ষগুণে ভাগ করে বিশাল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় যেনো কাপড়ে দাগ না পরে, বড় সারফেসে জিনিসটা ছড়িয়ে পরে, তাই এলকোহলিক পারফিউমে প্রোজেকশন বেশী এবং বেশীরভাগই ডি-ন্যাচার এলকোহল।
ফলে যখন এটা আপনি স্প্রে করবেন বা ব্যবহার করবেন তখন মূলত গায়ে লাগে সুগন্ধি টা আর এলকোহলটা বাতাসের সাথে মিশে যায়, তাই অনেক স্কলাররা বলেছেন যে এটা গায়ে দেয়া যাবে এবং এতে সালাতের কোন ক্ষতি হবে না।
সুতরাং এলকোহলিক সুগন্ধি হারাম নয় এবং এটা গায়ে দিয়ে সালাত আদায় করতে পারবেন।
আল্লাহ ভালো জানেন।